বুধবার | ১৯শে নভেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ
৪ঠা অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাড়ি ছেড়েছেন লাঞ্ছিত সেই বীর মুক্তিযোদ্ধা

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে লাঞ্ছিত বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল হাই কানু নিরাপত্তাহীনতার কারণে এলাকা ছেড়েছেন । রোববার (২২ ডিসেম্বর) বিকেলেই তিনি কুমিল্লা থেকে ফেনীতে চলে যান বলে জানিয়েছে তার পরিবার।

সোমবার (২৩ ডিসেম্বর) দুপুরে মোবাইল ফোনে আব্দুল হাই গণোমাধ্যমকে বলেন, তিনি এখন ফেনীতে তার ছেলের সঙ্গে অবস্থান করছেন। মারধর করায় সেখানে চিকিৎসা নিয়েছেন। পুলিশ ও প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করলে চৌদ্দগ্রামে বাড়িতে ফিরে আসবেন বলেও জানান তিনি।

ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আব্দুল হাই বলেন, গতকাল দুপুরে তিনি ওষুধ কিনতে বাড়ির কাছের বাজারে গিয়েছিলেন। এ সময় স্থানীয় জামায়াত কর্মী আবুল হাসেমের নেতৃত্বে ১০-১২ জন তাকে ধরে জুতার মালা পরিয়ে দেন। সেই সঙ্গে তাকে দ্রুত এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়।

আবদুল হাই কানুকে লাঞ্ছিত করার এই ঘটনার ভিডিও গতরাতে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।

আব্দুল হাইয়ের স্ত্রী রেহানা বেগম বলেন, গতকালের ঘটনায় আত্মসম্মানে আঘাত পেয়েছেন তার স্বামী। এ কারণে ঘটনার পরপরই তিনি এলাকা ছেড়ে ফেনী চলে যান।

তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর দুই দফায় তাদের বাড়িতে হামলা হয়। হামলাকারীরা তাদের এলাকা ছেড়ে চলে যাওয়ার জন্য হুমকি দিয়েছিলেন। আওয়ামী লীগ করার কারণেই তাদের বাড়িতে হামলা হয় বলে দাবি করেন তিনি।

আবদুল হাইয়ের ছেলে গোলাম মোস্তফা ভূঁইয়া বলেন, ‘হামলাকারীরা সকলেই স্থানীয় জামায়াত ও শিবিরের চিহ্নিত নেতা–কর্মী। তারা ২০ জনের বেশি ছিলেন। তাদের মধ্যে নেতৃত্বে থাকা কয়েকজন হলেন কুলিয়ারা গ্রামের আবুল হাশেম, অহিদুর রহমান, পেয়ার আহমেদ, রাসেল, শহীদ, এমরান হোসেন, ফরহান হোসেন, কামরান হোসেন। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধাকে এভাবে লাঞ্ছিত করা হলো, আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান হিসেবে কার কাছে বিচার চাইব?’

অভিযোগের বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম উপজেলা জামায়াতের আমীর মো. মাহফুজুর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, এ ঘটনার সঙ্গে স্থানীয় জামায়াতের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। প্রবাসী আবুল হাসেম আমাদের দলের কেউ না। তবে সমর্থক কিংবা অনুসারী হলেও হতে পারে। এ বিষয়ে আরও খোঁজ নেওয়া হচ্ছে।

এ বিষয়ে চৌদ্দগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ টি এম আক্তার উজ জামান গনমাধ্যমকে বলেন, ‘ভিডিওটি দেখে আমি ওই বীর মুক্তিযোদ্ধার সঙ্গে দুইবার কথা বলেছি। তিনি কোনো অভিযোগ করতে রাজি হচ্ছেন না। বলছেন, “অভিযোগ করলে আমি এলাকায় থাকতে পারব না, আপনাকেও ঝামেলায় ফেলতে চাই না।” তবে আমরা এ ঘটনা জড়িত ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করার চেষ্টা করছি। জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

Facebook
Twitter
LinkedIn
Print